স্থানীয় ইতিহাস ও ইতিহাসচর্চা
ভূমিকা: জাতি, দেশ বা মহাদেশের অতীত ঘটনাবলির আলোচনা ও বিশ্লেষণ বিগত শতকেও ইতিহাসচর্চার প্রচলিত ও স্বীকৃত প্রথা ছিল। দেশ বা জাতির অভ্যন্তরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্থানীয় অঞ্চলের ইতিহাসচর্চা তখন বিশেষ গুরুত্ব পেত না।
[1 ] স্থানীয় ইতিহাসের গুরুত্ব: ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিভিন্ন স্থান, অঞ্চল বা সম্প্রদায়ের ইতিহাস একত্রিত হয়ে কোনো দেশের জাতীয় ইতিহাস গড়ে ওঠে। তাই বিংশ শতকে স্থানীয় ইতিহাস ও ইতিহাসচর্চা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
[ 2] স্থানীয় ইতিহাসের বিষয়: বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্থানীয় ইতিহাসের চর্চা হয়ে থাকে। স্থানীয় অঞ্চলের আর্থসামাজিক বিবর্তন, শিল্প-স্থাপত্য, লোকসংস্কৃতি, স্থানীয় শাসকের ইতিবৃত্ত প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয় স্থানীয় ইতিহাসের আলোচনায় উঠে আসে।
[3] যাচাইকরণ: স্থানীয় ইতিহাসচর্চার বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে অন্যতম হল মৌখিক উপাদান। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে সময় অতিক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মৌখিক উপাদানে বহু কল্পনা ও অতিকথার প্রবেশ ঘটে। তাই যথেষ্ট সাবধানতার সঙ্গে মৌখিক উপাদানগুলি যাচাই করে তারপর সেগুলি ইতিহাসের তথ্য হিসেবে ব্যবহার করা দরকার।
[4] জেলাস্তরের ইতিহাসচর্চা: স্থানীয় ইতিহাসচর্চার একটি উল্লেখযোগ্য ধারা হল জেলাস্তরের ইতিহাসচর্চা। বাংলায় দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন গবেষক এই বিষয়ে চর্চা করছেন।
এই বিষয়ে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গবেষণাকর্ম কালীকমল সার্বভৌম রচিত ‘সে ইতিহাস বগুড়ার বৃত্তান্ত’, কুমুদনাথ মল্লিক রচিত ‘নদীয়া কাহিনি’, নিখিলনাথ রায় রচিত ‘মুর্শিদাবাদ কাহিনি’, সতীশচন্দ্র মিত্র রচিত ‘যশোহর খুলনার ইতিহাস’, এ কে এম গিয়াসউদ্দিন মাহমুদ রচিত ‘নোয়াখালীর ইতিহাস-ঐতিহ্য’, কালীনাথ চৌধুরী রচিত ‘রাজশাহীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’, শ্রীকেদারনাথ মজুমদার রচিত ‘ময়মনসিংহের ইতিহাস ও ময়মনসিংহের বিবরণ’ প্রভৃতি।
ক্লিক করুন দশম শ্রেণির ইতিহাস এর সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর