বাংলায় নীলচাষিদের কল্যাণে ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকার হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের ভূমিকা কী ছিল?

অথবা, নীলকরদের বিরুদ্ধে হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ও তাঁর ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকার কী ভূমিকা ছিল?

ভূমিকা: উনিশ শতকে নীলকর সাহেবদের শোষণ ও অত্যাচারে বাংলার নীলচাষিদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকার সাহসী সম্পাদক হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় দুর্দশাগ্রস্ত নীলচাষিদের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।

[1] প্রকৃত তথ্য প্রচার: বিদেশি নীলকর সাহেবরা বাংলার দরিদ্র চাষিদের খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিবর্তে নীলচাষে বাধ্য করত, চাষিদের নানাভাবে ঠকাত। নীলকরদের শোষণ ও অত্যাচারে চাষিদের জীবনে সীমাহীন দুর্দশা নেমে আসত এবং এসব বিষয়ের খবরাখবর হরিশচন্দ্র তাঁর পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশ করতেন।

[2] শিক্ষিতশ্রেণির সচেতনতা বৃদ্ধি: গ্রামবাংলার নীলচাষিদের ওপর সীমাহীন শোষণ ও অত্যাচারের কাহিনি ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’ পত্রিকায় নিয়মিত প্রকাশিত হতে থাকলে কলকাতার শিক্ষিত উচ্চ ও মধ্যবিত্ত বাঙালি সম্প্রদায় এবিষয়ে বিস্তারে জানতে পারে। ফলে তারা নীলকরদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে।

[ 3] আইনি পরামর্শ দান: হরিশচন্দ্র নীলচাষিদের সমস্যার বিবরণ শুনে তা থেকে তাদের মুক্ত করার জন্য নানাভাবে সহায়তা করতেন। তাদের দরখাস্ত লিখে দেওয়া, প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হতে পরামর্শ দেওয়া প্রভৃতি কাজে তিনি দিনরাত পরিশ্রম করতেন।

উপসংহার: অত্যাচারিত নীলচাষিদের কল্যাণে হরিশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ও = তাঁর পত্রিকা ‘হিন্দু প্যাট্রিয়ট’-এর নতুন বিভাগ ‘নীল জেলা’ নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের নীল বিদ্রোহ কিংবা ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে সরকার কর্তৃক ‘নীল কমিশন’ গঠনের পিছনে এই পত্রিকার – প্রভাবকে অস্বীকার করা যায় না।

ক্লিক করুন দশম শ্রেণির ইতিহাস এর সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment