দৃশ্যশিল্পের ক্ষেত্রে চিত্রকলা ও ফোটোগ্রাফির ইতিহাসচর্চা
ভূমিকা: দৃশ্যশিল্পের অন্তর্গত চিত্রশিল্পের দুটি উল্লেখযোগ্য ধারা হল চিত্রকলা বা ছবি আঁকা এবং ফোটোগ্রাফি। শিল্পীরা রং-তুলির সহায়তায় কোনো দৃশ্য বা বিষয়ের ছবি আঁকেন, আর ফোটোগ্রাফার তাঁর ক্যামেরার সাহায্যে কোনো দৃশ্যের ছবি তোলেন।
[1] ছবি আঁকা: মানবসমাজে প্রাগৈতিহাসিক যুগেই ছবি আঁকার সূত্রপাত ঘটে। চিত্রকররা অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সমকালীন কোনো বিষয়ের ছবি এঁকে থাকেন। তবে সেই ছবিতে শিল্পীর দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব পড়লেও ছবির বিষয়বস্তু যে তথ্যনিষ্ঠ হয়ে থাকে, তা পণ্ডিতরা স্বীকার করেন। প্রাচীনকাল থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত এরূপ অসংখ্য ছবি সমকালীন ইতিহাসের উপাদান হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
[2] চিত্রকলার ইতিহাসচর্চা: বর্তমানে বিভিন্ন পণ্ডিত চিত্রকলার ইতিহাসচর্চা করে চলেছেন। এই চর্চার ক্ষেত্রে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গবেষণাকার্য হল অশোক মিত্র রচিত ‘ভারতের চিত্রকলা’, ড. নীলিমা আফরিন রচিত ‘বাংলাদেশের শিল্পকলার উৎস সন্ধান’, সৈয়দ লুৎফল হক রচিত ‘চিত্রকলা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’ প্রভৃতি।
[3] গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস হিসেবে ফোটোগ্রাফি: ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে আলেকজান্ডার ওয়ালকট ক্যামেরা আবিষ্কারের পর থেকে ক্যামেরার সাহায্যে ছবি তোলা অর্থাৎ ফোটোগ্রাফি চর্চার বিষয়টি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। সাধারণ ক্যামেরায় সাদা-কালো ও রঙিন ছবির যুগ পেরিয়ে বর্তমানে ডিজিট্যাল ক্যামেরায় উন্নতমানের ছবি তোলা সম্ভব হচ্ছে। ফোটোগ্রাফাররা ক্যামেরার সাহায্যে কোনো ঘটনা বা বিষয়ের যথার্থ ছবি তোলেন, যা পরবর্তীকালে ইতিহাসচর্চার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজে লাগে।
[4] গবেষকগণ : বর্তমানকালে বিভিন্ন গবেষক ফোটোগ্রাফি নিয়ে ইতিহাসচর্চা করছেন। এই বিষয়ে এ কে এম মহসীন, মহম্মদ হুমায়ুন কবীর, জন ওয়েড, আর ডগলাস নিকেল প্রমুখ গবেষণা করেছেন।
উপসংহার: ইতিহাসের উপাদান হিসেবে আঁকা ছবি ও ফোটোগ্রাফ-দুটিই তিহাসচর্চার কাজে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তবে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ফোটোগ্রাফ অনেকটাই জীবন্ত, এবং আধুনিক ইতিহাসচর্চায় এর প্রাসঙ্গিকৃতাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ক্লিক করুন দশম শ্রেণির ইতিহাস এর সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর