উত্তর – মুন্ডা বিদ্রোহের প্রকৃতি বা চরিত্র
ভূমিকা: ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ-বিরোধী শাসনকালে ভারতের আন্দোলনগুলির মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিল মুন্ডা বিদ্রোহ (১৮৯৯-১৯০০ খ্রি.)। এই বিদ্রোহের প্রকৃতি বা চরিত্র ছিল বহুমুখী। যেমন-
[1] ঐক্য: বিরসার নেতৃত্বে মুন্ডাদের ঐক্য ছিল চোখে পড়ার মতো। বিরসা প্রথমে নতুন ধর্মপ্রচারের মাধ্যমে মুন্ডাদের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করেন। পরে প্রবল বিদ্রোহের সময় এই ঐক্য আরও জোরদার হয়। পরবর্তীকালে বিদ্রোহের অবসান ঘটলেও বিরসার ঐক্যবদ্ধ অনুগামীরা ‘বিরসাইট’ বা ‘বিরসা সম্প্রদায়’ প্রতিষ্ঠা করে।
[2] আদিবাসী বিদ্রোহ: মুন্ডা বিদ্রোহ ছিল মূলত একটি আদিবাসী বা উপজাতি বিদ্রোহ। কারণ আদিবাসী মুন্ডারাই ছিল এই বিদ্রোহের চালিকাশক্তি।
[3] কৃষকবিদ্রোহ: মুন্ডা বিদ্রোহে মূলত কৃষকরা অংশ নিয়েছিল। এজন্য অধ্যাপক নরহরি কবিরাজ মুন্ডা বিদ্রোহকে ‘কৃষকবিদ্রোহ’ বলে অভিহিত করেছেন।
[4] ব্রিটিশ বিরোধিতা: মুন্ডা বিদ্রোহ ছিল ভারতের ব্রিটিশ-বিরোধী একটি গণসংগ্রাম। ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটানোই ছিল বিদ্রোহীদের প্রধান লক্ষ্য।
[5] স্বাধীনতার দাবি: মুন্ডা বিদ্রোহে স্বাধীনতার দাবি খুবই স্পষ্ট ছিল। বিরসা মুন্ডা বিদেশিদের বিতাড়িত করে স্বাধীন মুন্ডারাজ প্রতিষ্ঠার কথা ঘোষণা করেন।
উপসংহার: মুন্ডা বিদ্রোহে ধর্মীয় ভাবধারার যথেষ্ট প্রভাব ছিল। বিদ্রোহের নেতা বিরসা মুন্ডা নিজেকে অলৌকিক শক্তির অধিকারী হিসেবে তুলে ধরে প্রচার করেছিলেন যে তিনি ‘ঈশ্বরের আদেশ’ অনুযায়ী মুন্ডাদের উদ্ধারের ন কাজে নেমেছেন।
ক্লিক করুন দশম শ্রেণির ইতিহাস এর সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর