উত্তর – বিরসা মুন্ডা
ভূমিকা: ১৮৯৯-১৯০০ খ্রিস্টাব্দে ছোটোনাগপুর ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে আদিবাসী মুন্ডা সম্প্রদায় শক্তিশালী বিদ্রোহ শুরু করে। বিরসা মুন্ডা ছিলেন এই বিদ্রোহের প্রধান নেতা।
[1] প্রথম জীবন: বিরসা মুন্ডা ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে রাঁচি জেলার উলিহাত গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সুগান মুন্ডা ছিলেন একজন বর্গাচাষি। বিরসা বাল্যকালে খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলে পড়াশোনা করেন।
[2] ধর্মপ্রচার: বিরসা ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে এক নতুন ধর্মমত প্রচার করেন। তিনি নিজেকে অবতার বলে ঘোষণা করেন এবং দাবি করেন যে, তিনি ভগবানের দর্শন পেয়েছেন। তিনি মহাপ্লাবনের ভবিষ্যদ্বাণী করেন। তিনি মুন্ডা সমাজের প্রচলিত কুসংস্কারের বিরোধিতা করেন, পশুবলি বন্ধ এবং মাদক বর্জন করার কথা বলেন। তিনি মুন্ডাদের উপবীত ধারণ করতে বলেন।
[3] প্রথম আন্দোলন: ১৮৯৩-৯৪ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ সরকারি বনবিভাগ মুন্ডা গ্রামের পতিত জমি অধিগ্রহণ করতে শুরু করলে বিরসা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন।
[4] বিদ্রোহের সূচনা: বিরসা ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ মুন্ডাদের ঐক্যবদ্ধ করে সেনাবাহিনী গড়ে তোলেন এবং ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করনে। ২৪ ডিসেম্বর (১৮৯৯ খ্রি.) বিদ্রোহের দিন ঠিক হয়।
[ 5] বিদ্রোহের প্রসার: ১৯০০ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে বিরসার নেতৃত্বে বিদ্রোহ প্রবল আকার ধারণ করে। বিদ্রোহীরা সরকারি অফিস, থানা, ইংরেজ পুলিশ ও কর্মচারীদের আক্রমণ করতে থাকে।
[6] মৃত্যু: প্রবল বিক্রমে লড়াই করেও বিরসা-র বাহিনী শেষপর্যন্ত ব্রিটিশবাহিনীর কাছে পরাজিত হয়। বিরসাকে রাঁচি জেলে বন্দি করা হয়। সেখানে কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ২৫ বছর বয়সে তাঁর মৃত্যু হয়।
উপসংহার: মুন্ডা সমাজে বিরসা মুন্ডা ছিলেন ত্রাতাস্বরূপ। তাঁর অসামান্য প্রতিভা মাত্র একুশ বছর বয়সেই তাঁকে মুন্ডাদের নেতৃত্বের আসনে বসিয়েছিল।
ক্লিক করুন দশম শ্রেণির ইতিহাস এর সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর