উত্তর – সাঁওতাল বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য
ভূমিকা: ভারতের সুপ্রাচীন আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায় ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে অত্যাচারী ব্রিটিশ সরকার ও তাদের সহযোগী জমিদার ও মহাজনদের | বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। এই বিদ্রোহের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি ছিল-
[1] সর্বস্তরের অংশগ্রহণ: সাঁওতাল বিদ্রোহে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সর্বস্তরের এবং সব বয়সের সাঁওতালরা অংশগ্রহণ করে। ফলে বিদ্রোহ ব্যাপক আকার নেয়।
[2] গণবিদ্রোহ: সাঁওতালরা ছাড়াও স্থানীয় নিম্নবর্ণের বিভিন্ন মানুষ যেমন-কামার, কুমোর, তাঁতি, গোয়ালা, ডোম প্রভৃতি বর্ণ ও পেশার মানুষও সাঁওতাল বিদ্রোহে অংশ নেয়। ফলে সাঁওতাল বিদ্রোহ প্রকৃত গণবিদ্রোহে পরিণত হয়।
[3] অসম অস্ত্রের লড়াই: সাঁওতাল বিদ্রোহ ছিল সাঁওতাল ও ইংরেজ বাহিনীর মধ্যে অসম অস্ত্রশস্ত্রের লড়াই। আদিবাসী সাঁওতালরা সেকেলে তিরধনুক, বল্লম নিয়ে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ব্রিটিশবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল হয়।
[4] ব্রিটিশ-বিরোধিতা: সাঁওতাল-অধ্যুষিত অঞ্চল থেকে ব্রিটিশ শক্তির আধিপত্য লুপ্ত করাই ছিল বিদ্রোহীদের মূল লক্ষ্য।
[5] ব্রিটিশ সহযোগীদের বিরোধিতা: শুধু ব্রিটিশ শাসন নয়, ব্রিটিশদের সহযোগী বহিরাগত জমিদার ও মহাজনদের বিরোধিতা এবং তাদের ধ্বংসসাধনও বিদ্রোহীদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল।
[6] আক্রমণের কেন্দ্র: সাঁওতাল বিদ্রোহীদের আক্রমণের মূল কেন্দ্র ছিল থানা, ডাকঘর, রেলস্টেশন, ইউরোপীদের বাংলো, জমিদার ও মহাজনদের বাড়ি প্রভৃতি।
উপসংহার: সাঁওতাল বিদ্রোহ আপাতদৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়েছিল ঠিকই, তবে এই বিদ্রোহ ব্রিটিশ সরকারকে যে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিল সে কথা অস্বীকার করা যায় না।
ক্লিক করুন দশম শ্রেণির ইতিহাস এর সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর