উত্তর – কোল বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য
ভূমিকা: ব্রিটিশ সরকার, ব্রিটিশদের মিত্র বহিরাগত জমিদার ও মহাজনদের বিরুদ্ধে ছোটোনাগপুর অঞ্চলে বসবাসকারী আদিবাসী কোলরা ১৮৩১-৩২ খ্রিস্টাব্দে শক্তিশালী বিদ্রোহ শুরু করে। এই বিদ্রোহের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। যেমন-
[ 1] আদিবাসীদের বিদ্রোহ: কোল বিদ্রোহে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিল আদিবাসী কোলরা। তাদের সঙ্গে নিম্নবর্ণের অন্যান্য চাষি, কামার, কুমোর প্রভৃতি মানুষও যোগদান করে।
[2] ঐক্যবদ্ধতা: বিদ্রোহ চলাকালীন আদিবাসী কোলরা ইংরেজ শাসক, জমিদার ও মহাজনদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করেছিল।
[3] অরণ্যের অধিকার: কোলদের বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে অরণ্য সম্পদের ওপর কোলদের চিরাচরিত অধিকার রক্ষার দাবি জোরালো হয়ে উঠেছিল।
[4] ব্রিটিশ বিরোধিতা: কোল বিদ্রোহীদের আক্রমণের প্রধান লক্ষ্য ছিল ইংরেজ ও বহিরাগত জমিদার। চার্লস মেটকাফ-এরমতে, ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটানোই বিদ্রোহীদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল।
[5] বিদ্রোহের বার্তা: বিদ্রোহী কোলরা নাকাড়া বাজিয়ে, আমগাছের শাখা বা যুদ্ধের তির বিলি করে নিজেদের মধ্যে বিদ্রোহের বার্তা ছড়িয়ে দিত।
[6] সহযোগিতার অভাব: কোল বিদ্রোহের প্রতি শহুরে শিক্ষিত সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সহযোগিতার অভাব লক্ষ করা গিয়েছিল।
উপসংহার: শহুরে শিক্ষিত বুদ্ধিজীবীদের সমর্থন ও সহযোগিতা না পেলেও কোলরা যেভাবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ সংঘটিত করে, তাতে ইংরেজরা আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। চার্লস মেটাকাফ স্বীকার করেছেন, বিদ্রোহী কোলদের উদ্দেশ্য ছিল ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটানো।
ক্লিক করুন দশম শ্রেণির ইতিহাস এর সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর