উত্তর – চুয়াড় বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য
ভূমিকা: ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার পর থেকে কোম্পানি ও তার কর্মচারীরা এদেশের আদিবাসী কৃষক ও দেশীয় জমিদারদের ওপর তীব্র শোষণ-পীড়ন চালাতে শুরু করে। এর বিরুদ্ধে আদিবাসী চুয়াড় সম্প্রদায় বিদ্রোহ শুরু করে যা চুয়াড় বিদ্রোহ নামে পরিচিত। এই বিদ্রোহের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। যেমন-
[1] সশস্ত্র উপজাতি বিদ্রোহ: চুয়াড় বিদ্রোহ ছিল সশস্ত্র আদিবাসী বা উপজাতি সম্প্রদায়ের বিদ্রোহ।
[2] ব্রিটিশ-বিরোধিতা: চুয়াড় বিদ্রোহ ছিল মূলত ব্রিটিশ-বিরোধী একটি বিদ্রোহ। ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে চুয়াড় সম্প্রদায় গর্জে উঠেছিল।
[ 3] জমিদার-কৃষক ঐক্য: চুয়াড় বিদ্রোহ দেশীয় জমিদারদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়নি। বরং দেশীয় জমিদাররা ব্রিটিশ-বিরোধী এই বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়ে আদিবাসী চুয়াড় কৃষকদের নিজেদের পক্ষে শামিল করেছিল।
[ 4] দীর্ঘস্থায়িত্ব: চুয়াড় বিদ্রোহ ছিল একটি দীর্ঘস্থায়ী বিদ্রোহ। ১৭৬৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অর্থাৎ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্রিটিশ-বিরোধী এই বিদ্রোহ চলে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন।
[ 5] দুটি পর্যায়: দীর্ঘস্থায়ী চুয়াড় বিদ্রোহে দুটি পর্যায় লক্ষ করা যায়। প্রথম পর্যায়টি শুরু হয়েছিল ১৭৬৭-৬৮ খ্রিস্টাব্দে এবং দ্বিতীয় পর্যায়টি চলেছিল ১৭৯৮-৯৯ খ্রিস্টাব্দ সময়কালে।
উপসংহার: অস্ত্রচালনা ও যুদ্ধ ছিল আদিবাসী চুয়াড়দের সহজাত বৈশিষ্ট্য। এই প্রবণতাই তাদের বিদ্রোহমুখী করেছিল এবং ব্রিটিশ-বিরোধী লড়াইকে দীর্ঘস্থায়ী করেছিল।
ক্লিক করুন দশম শ্রেণির ইতিহাস এর সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর