বিদ্রোহ বলতে কী বোঝায় এবং এর কয়েকটি উদাহরণ দাও।

ভূমিকা: বিভিন্ন দেশে ক্ষুব্ধ বা অসন্তুষ্ট মানুষজন যে উপায়ে নিজেদের ক্ষোভ বা প্রতিবাদ প্রকাশ করে থাকে সেগুলির মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য উপায় বা ধারা হল বিদ্রোহ।

[1] বিদ্রোহ কী: কোনো সমাজে বা রাষ্ট্রে কোনো প্রচলিত ব্যবস্থার পরিবর্তনের দাবিতে বিরোধী জনগোষ্ঠী সুসংগঠিত বা অসংগঠিতভাবে যে আন্দোলন গড়ে তোলে তা সাধারণভাবে বিদ্রোহ নামে পরিচিত।

[2] বৈশিষ্ট্য: বিদ্রোহের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল-[i] বিদ্রোহ স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। [ii] বিদ্রোহ পরিকল্পিত বা অপরিকল্পিতভাবে শুরু হতে পারে। [iii] বিদ্রোহ সফল হলে পূর্বতন ব্যবস্থার পরিবর্তনের সম্ভাবনা থাকে। [iv] বিদ্রোহ ব্যর্থ হলে পূর্বতন ব্যবস্থার পরিবর্তনের সম্ভাবনা থাকে না।

[3] উদাহরণ: ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতে রংপুর বিদ্রোহ, পাবনা বিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহ প্রভৃতি কৃষকবিদ্রোহ, সিপাহি বিদ্রোহ (১৮৫৭খ্রি.) প্রভৃতি হল বিদ্রোহের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। [i] ভারতে ১৮৫৭খ্রিস্টাব্দের সিপাহি বিদ্রোহ ছিল স্বল্পকালীন বিদ্রোহ, আবার চিনের তাইপিং বিদ্রোহ দীর্ঘদিন ধরে চলেছিল। [ii] নীল বিদ্রোহ পরিকল্পিতভাবে শুরু হলেও সিপাহি বিদ্রোহ অপরিকল্পিতভাবে শুরু হয়েছিল। [iii] নীল বিদ্রোহ সফল হওয়ায় সরকার নীল কমিশন গঠন করে নীলচাষিদের অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষার উদ্যোগ নেয়। [iv] সিপাহি বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ায় ভারতীয় সিপাহিদের দুর্দশা দূর হয়নি। [v] অনেকসময় বিদ্রোহ এক বিশেষ গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।

উপসংহার: ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতবর্ষে বহুবার বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। – এগুলি বহুক্ষেত্রে ব্যর্থ হলেও প্রচলিত ব্যবস্থার কিছু-না-কিছু পরিবর্তন ঘটিয়েছে।

ক্লিক করুন দশম শ্রেণির ইতিহাস এর সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment