দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটকের গুরুত্ব কী?

ভূমিকা: উনিশ শতকে বাংলার নীলচাষিদের ওপর নীলকর সাহেবদের শোষণ, অত্যাচার ও নীলবিদ্রোহের পরিপ্রেক্ষিতে বিশিষ্ট নাট্যকার ও সমাজসেবক দীনবন্ধু মিত্র (১৮২৯-১৮৭৩ খ্রি.) ‘নীলদর্পণ’ (১৮৬০খ্রি.) নাটক রচনা করেন। সমকালীন প্রেক্ষাপটে এই নাটকের অপরিসীম গুরুত্ব ছিল। যেমন-

[1 ] নীলচাষিদের দুর্দশা: নীলকর সাহেবদের অত্যাচারে বাংলার চাষিদের বাধ্য হয়ে নীলচাষ করা, চাষিদের ওপর নীলকর সীমাহীন নির্যাতন চালানো, তার ফলে নীলবিদ্রোহের সূত্রপ (১৮৫৮ খ্রি.) প্রভৃতি বিভিন্ন ঘটনার চিত্র ‘নীলদর্পণ’ নাট সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

[2] শিক্ষিতসমাজে আলোড়ন: ‘নীলদর্পণ’ নাটকে নীলচাষিত ওপর যে নির্মম অত্যাচারের চিত্র তুলে ধরা হয়, তা থে শিক্ষিতসমাজ নীলচাষিদের ওপর নীলকরদের এইসব জুলুম অত্যাচার সম্পর্কে জানতে পারে। ফলে বাংলার শিক্ষিতসমা তীব্র আলোড়নের সৃষ্টি হয়।

[ 3] ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ: ‘নীলদর্পণ’ই হল প্রথম বাংলা ভাষায় লেখা নাটক যা ইংরেজিতে অনূদিত হয়। ইংরেজি অনুবাদটি খ্রিস্ট পাদ্রি রেভারেন্ড জেমস লং-এর নামে প্রকাশিত হয়। অনেকে ম করেন, মাইকেল মধুসূদন দত্ত এই গ্রন্থটির অনুবাদ করেন এবং ব্রিি সরকারের শাস্তি এড়াতে তা লং সাহেবের নামে প্রকাশ করেন। ষ হোক, সরকার লং সাহেবকে অভিযুক্ত (১৮৬১ খ্রি.) করে। বিচ তাঁর একমাস কারাদণ্ড এবং ১ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য হয়।

[4] ইউরোপে প্রচার: ইংরেজি-সহ কিছু ইউরোপীয় ভাষায় এই নাটক অনূদিত হয়। ‘নীলদর্পণ’ নাটক থেকে ইউরোপের মানুষ বাংল চাষিদের ওপর নির্মম অত্যাচারের কাহিনি জেনে শিহরিত হয়।

উপসংহার: দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটক শুধুমাত্র নীলচাষিদে দুর্দশাকেই তুলে ধরেনি; এই নাটক সাম্রাজ্যবাদী শোষণ ও অত্যাচার সম্পন্ন শিক্ষিত বাঙালি সমাজকে সচেতন ও প্রতিবাদী করে তোলার মাধ্যমে তাদে মনে দেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদের জন্ম দিয়েছিল।

ক্লিক করুন দশম শ্রেণির ইতিহাস এর সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment