‘গ্রামবার্ত্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকার প্রকাশ
ভূমিকা: উনিশ শতকের বাংলায় গ্রামীণ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ‘গ্রামবার্তাপ্রকাশিকা’ নামের পত্রিকাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
[1] পত্রিকার প্রকাশ: ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা থেকে ‘গ্রামবার্ত্তাপ্রকাশিকা’ নামে পত্রিকাটির প্রকাশ শুরু হয়। পরে ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে অবিভক্ত বাংলার কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি থেকে ‘মথুরানাথ প্রেস’ (এম এন প্রেস) নামক ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করে সেখান থেকে পত্রিকা প্রকাশের কাজ চলতে থাকে।
[2] অগ্রগতি: ‘গ্রামবার্ত্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকাটি প্রথমে মাসিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হত। পরে ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে পত্রিকাটি পাক্ষিক এবং ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে সাপ্তাহিক পত্রিকায় পরিণত হয়।
[3] সম্পাদক: ‘গ্রামবার্ত্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন হরিনাথ মজুমদার (১৮৩৩-৯৬ খ্রি.), যিনি কাঙাল হরিনাথ নামেই প্রসিদ্ধ। তিনিই এই পত্রিকার জন্য সংবাদ সংগ্রহ করতেন, সম্পাদনা করতেন এবং পাঠকদের হাতে পৌঁছে দিতেন। অর্থাৎ তিনি ছিলেন একাধারে সাংবাদিক, সম্পাদক, প্রকাশক এবং বিক্রেতা।
[4] পত্রিকার উদ্দেশ্য: ‘গ্রামবার্ত্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্য ছিল গ্রামীণ সংবাদগুলি সকলের সামনে তুলে ধরা। পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় (মে, ১৮৬৩ খ্রি.) সম্পাদক হরিনাথ মজুমদার লেখেন, “এ পর্যন্ত বাঙ্গালা সংবাদপত্রিকা যতই প্রচারিত হইতেছে তাহা কেবল প্রধান প্রধান নগর ও বিদেশীয় সম্বাদাদিতেই পরিপূর্ণ। গ্রামীয় অর্থাৎ মফস্সলের অবস্থাদি কিছুই প্রকাশিত হয় না।…. যাহাতে গ্রামবাসীদের অবস্থা…. প্রকাশিত হয় তাহাই এই পত্রিকার প্রধানোদ্দেশ্য……/”
[5] আর্থিক সংকট: ‘গ্রামবার্ত্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকা কখনও আর্থিক স্বচ্ছলতার মুখ দেখতে পায়নি। বিভিন্ন সহৃদয় ব্যক্তির আর্থিক সহায়তার দ্বারা দীর্ঘ ২৫ বছর পত্রিকাটি চালু ছিল। অবশেষে মাত্র ৭টাকা ঋণের দায়ে পত্রিকাটির প্রকাশ বন্ধ হয়ে যায়।
উপসংহার: ‘গ্রামবার্ত্তাপ্রকাশিকা’ পত্রিকাটি ছিল উনিশ শতকের সময়োপযোগী একটি পত্রিকা। পত্রিকাটি লোকসানে চলা সত্ত্বেও শুধুমাত্র গ্রামীণ মানুষের কল্যাণের উদ্দেশ্যে পত্রিকাটি চালু রাখা হয়েছিল। একসময়
ক্লিক করুন দশম শ্রেণির ইতিহাস এর সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর