সাম্প্রতিককালে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ইতিহাসচর্চার সূত্রপাত ও তার প্রসার সম্পর্কে আলোচনা করো।

সাম্প্রতিককালে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ইতিহাসচর্চা

ভূমিকা: আদিম মানুষ যখন চাকার আবিষ্কার করেছে বা পাথরে পাথরে ঘষে আগুন জ্বালাতে শিখেছে তখন থেকেই বিজ্ঞান-প্রযুক্তির পথচলা শুরু হয়েছে বলে ধরা যায়। সেই সময় থেকে বিবর্তনের পথ বেয়ে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি আজ উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে গিয়েছে।

[ 1] প্রাচীন যুগে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি: প্রাচীনকালে মিশর, ব্যাবিলন, গ্রিস, ভারত প্রভৃতি দেশে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির অগ্রগতি খুব ধীরগতিতে হয়েছিল। তবে মধ্যযুগে এসে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশে কৃষি, যুদ্ধাস্ত্র প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির যথেষ্ট অগ্রগতি ঘটে।

[2] আধুনিক যুগে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি: আধুনিককালে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যোগাযোগ ও পরিবহণ ব্যবস্থা, কৃষি, শিল্প, যুদ্ধসহ বিজ্ঞান-প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায় চূড়ান্ত বিকাশ লক্ষ করা যায়।

[3] ভৌগোলিক আবিষ্কার ও শিল্পবিপ্লব: পঞ্চদশ শতকে স্পেন, পোর্তুগাল, ইংল্যান্ড প্রভৃতি দেশের জাহাজ নির্মাণশিল্পে অগ্রগতিও পরবর্তীকালে ইংল্যান্ড-সহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে সংঘটিত শিল্পবিপ্লব আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি সারা বিশ্বের রাজনীতি ও অর্থনীতিকে প্রভাবিত করেছে।

[4] গবেষণা গ্রন্থ: বিজ্ঞান-প্রযুক্তির বিষয়ে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গবেষণাকর্ম হল জে ডি বার্নাল রচিত ‘ইতিহাসে বিজ্ঞান’, টমাস কুহন রচিত ‘দ্য স্ট্রাকচার অব সায়েন্টিফিক রেভোলিউশনস্’, ডেভিড আরনল্ড রচিত ‘সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড মেডিসিন ইন কলোনিয়াল ইন্ডিয়া’, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় রচিত ‘এ হিস্ট্রি অব হিন্দু কেমিস্ট্রি’, দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞান ও সমাজ’ এবং ‘প্রাচীন ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’, দীপক কুমার রচিত ‘সায়েন্স অ্যান্ড দ্য রাজ’, তপন চক্রবর্তী রচিত ‘শতবর্ষে বাঙালির বিজ্ঞানসাধনা’ প্রভৃতি।

উপসংহার: সুদূর অতীত থেকে আজ পর্যন্ত বিজ্ঞান মানুষের জীবনের নিত্যসঙ্গী। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির হাত ধরেই মানবসভ্যতা ক্রমশ উন্নতির শিখরে পৌঁছেছে। তাই মানবসভ্যতার ইতিহাস রচনায় বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ইতিহাসচর্চা অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

ক্লিক করুন দশম শ্রেণির ইতিহাস এর সমস্ত অধ্যায় অনুযায়ী তার সব প্রশ্নের উত্তর

Leave a Comment